সত্যজিৎ রায়ের ডকুমেন্টরি এবং শর্টফিল্মসমগ্র

বাংলা সিনেমায় সত্যজিৎ রায় এর কাজ এবং অবদান নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই। বাংলা মুভ্যি মায়েস্ত্রো হিসাবে সত্যজিৎ আমার কাছে একক একটা নাম । তার অসাধারণ সব কাজের মধ্যে অপু ট্রিলোজি এবং কোলকাতা ট্রিলোজি সিনেমাপ্রেমীদের কাছে কমবেশী পরিচিত। কিন্তু অসাধারণ প্রতিভাধর এই মানুষটির সগর্ব বিচরণ যেমন শিল্প সাহিত্য সঙ্গীতের বিভিন্ন শাখায়, তেমনি ক্যামেরার পিছনের সত্যজিৎ রায়ও তাঁর অসামান্যতার ছাপ রেখেছেন বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টরি আর শর্টফিল্ম নির্মাণের মাধ্যমে। সেগুলো দেখেও সিনেমাপ্রেমীরা নিশ্চিত মুগ্ধ হবেন, বিস্মিত হবেন এবং আনন্দিত হবেন – একথায় জোরগলায় বলাটাও খুবই স্বাভাবিক।
একনজরের সত্যজিৎ রায়ের ডকুমেন্টরি আর শর্টফিল্মের ছোট্ট ফিল্মোগ্রাফিটা দেখে নেয়া যাক -

এবারে ক্রমান্বয়ে ডকুমেন্টরি এবং শর্টফিল্মগুলোর ছোট্ট রিভিঊ এবং ডাউনলোড লিংক নিয়ে কথা বলা যাক -
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) [১৯৬১]
সত্যজিৎ এর প্রথম ডকুমেন্টরি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে । ১৯৬১ সালে নির্মিত ৫৪ মিনিটের সাদাকালো এই তথ্যচিত্রে রবীন্দ্রনাথের দূর্লভ সব ছবি আর ভিডিও ফুটেজের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলা, শিক্ষাকাল, বিদেশযাত্রা এমনকি জমিদারীর সমকালীন দৃশ্যায়ন করা হয়েছে বিশ্বাসযোগ্যভাবে।
ধারা : বায়োগ্রাফিকাল ডকুমেন্টরি
ব্যাপ্তিকাল : ৫৪ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
প্রযোজনা : ফিল্মস ডিভিশান, ইন্ডিয়া
ডাউনলোড - Click This Link
টু (Two) [১৯৬৫]
প্রথম প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের প্রায় বছর তিনেক পরে সত্যজিৎ তার প্রথম শর্টফিল্ম এর জন্ম দেন , শিরোনাম Two। এর চিত্রনাট্য এবং সংগীতের দায়িত্বেও ছিলেন সত্যজিৎ। এই সাদাকালো শর্টফিল্মটি নির্মিত হয়েছিল কোন কথ্যভাষার ব্যবহার না করেই- নির্বাক চলচ্চিত্রের জন্য একটা ট্রিবিউট বলা যায় । তবে এখানেও চলচ্চিত্রের ভাষার দূর্দান্ত মুনশিয়ানা দেখা গিয়েছিল এ। জাত ফিল্মমেকারের জন্য স্রেফ দরকার ইচ্ছে, দেখিয়েছিলেন তরুণ সত্যজিৎ। কারণ নামকরণেও স্বকীয় সত্যজিৎ এই ছবিতে দেখান অর্থনৈতিকভাবে দুই মেরুতে অবস্থানরত ছোট্ট দুই ছেলের দ্বৈরথ। শিশু মনস্তত্বের পাশাপাশি সত্যিকার আনন্দলাভের চিরায়ত স্বাধীনতার সত্যপ্রকাশ এই শর্ট ফিল্মের ১৫ মিনিটের ক্যানভাসে ।
ধারা : শর্টফিল্ম
ব্যাপ্তিকাল : ১৬ মিনিট
ভাষা : নির্বাক
প্রযোজনা : Esso World Theater
ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=s36F-65pMtM
Click This Link
সিকিম (Sikkim) [১৯৭১]
সিকিম তথ্যচিত্রটির নির্মাণ ৭১ এ হলেও ভারত সরকার দীর্ঘদিন , প্রায় চার দশক ধরে এই প্রামাণ্যচিত্রকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল । সিকিমের সেসময়ের রাজা পালডেন থনডুপ নামগিয়্যাল তাঁর দেশে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে তৎকালীন সত্যজিত রায়কে এই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে নির্মাণ নিয়ে রাজার সাথে তার মত বিরোধও হয় । ১৯৭৫ সালে এক বিতর্কিত অবস্থার মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয় সিকিম। ফলে না ভারত, না সিকিম কোথাও মুক্তি পায়নি তথ্যচিত্রটা। এরপর নির্মাতাও হাল ছেড়ে দেন। দর্শক, ছবিপাড়াসহ সব মহল ভুলেই যান 'সিকিম' ছবির কথা। বিস্মৃতি কবলিত হয় এটি। ২০১০ এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয় ।
ধারা : ডকুমেন্টারি
বছর : ১৯৭১
ব্যাপ্তিকাল : ৬০ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
টরেন্ট ডাউনলোড - Click This Link
আংশিক ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=VmSeVvA61xU
দ্য ইনার আই (The Inner Eye) [১৯৭২]
শান্তিনিকেতনের অন্ধ চিত্রকর এবং শিক্ষক বিনোদ বিহারী মুখার্জির জীবন ও চিত্রকর্ম নিয়ে এই ডকুমেন্টরি । এটি সত্যজিৎ রায়ের নন-ফিচার ফিল্মগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রসংশিত এবং উল্লেখযোগ্য।সত্যজিৎ যখন শান্তিনিকেতনে পড়তেন তখন বিনোদ বিহারী মুখার্জি তাঁর সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। আধুনিক ভারতীয় চারুকলার অন্যরম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন অসামান্য প্রতিভাধর চিত্রশিল্পী এবং ম্যুরাল শিল্পী। এই ডকুমেন্টরিতে বিনোদ বিহারী মুখার্জির শিল্পমনস্কতার স্বকীয়তার পাশাপাশি দেখানো হয়েছে দৃষ্টিহীনতার সাথে সন্ধি করেও কীভাবে একজন সত্যিকারের শিল্পী একনিষ্ঠভাবে শিল্পের সাথে নিজেকে মিশিয়ে নিতে পারেন । শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিশীলতাকে বন্দী করে না - এই অসাধারণ অভিজ্ঞতার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় দ্য ইনার আই।
ধারা : বায়োগ্রাফিকাল ডকুমেন্টরি
সত্যজিৎ এর ভূমিকা : ধারাবর্ণনা, চিত্রনাট্য, সংগীত এবং পরিচালনা
ব্যাপ্তিকাল : ২০ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
প্রযোজনা : ফিল্ম ডিভিশান
ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=bqnpyV4GFbI
বালা (Bala) [১৯৭৬]
Bala নামের যে তথ্যচিত্রটি সত্যজিৎ নির্মাণ করেন সেটি ছিলো প্রখ্যাত ভারতনাট্যম শিল্পী বালাসরস্বতীকে নিয়ে। ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস এর অর্থায়নে ১৯৭৬ সালে এই তথ্যচিত্রটি প্রকাশিত হয় । ৩৩ মিনিটের রঙ্গিন এই Bala নামের যে তথ্যচিত্রটি সত্যজিত নির্মাণ করেন সেটি ছিলো প্রখ্যাত ভারতনাট্যম শিল্পী বালাসরস্বতীকে নিয়ে। ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস এর অর্থায়নে ১৯৭৬ সালে এই তথ্যচিত্রটি প্রকাশিত হয় । ৩৩ মিনিটের রঙ্গিন এই বায়োডকুমেন্টরির রচনা, পরিচালনা এবং সংগীতে ছিলেন সত্যজিত নিজেই । বর্ণনা ছিল ইংরেজিতে পঞ্চাশোত্তীর্ণ বালার জীবন এবং নৃত্যসাধনা নিয়ে এই তথ্যচিত্রে দেখা গিয়েছিল বালার অসাধারণ নৃত্যশৈলীর দৃশ্য। এমনকী ঐ প্রৌঢ় বয়সেও বালার নৃত্যশৈলী ছিল অসামান্য, যদিও তার প্রথম জীবনের নৃত্যচর্চা ছিলো অনেকটাই অনালোচিত । এ নিয়ে সত্যজিতের আক্ষেপও কম ছিল না। এই তথ্যচিত্রে দেখা যায় বালার অসাধারণ পারফর্ম্যান্স !
ধারা : বায়োগ্রাফিকাল ডকুমেন্টরি
রূপায়নে : বালাসরস্বতী
সত্যজিৎ এর ভূমিকা : ধারাবর্ণনা, চিত্রনাট্য, সংগীত এবং পরিচালনা
ব্যাপ্তিকাল : ৩৩ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
প্রযোজনা : ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস
ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=ak_a1RJ2DZc
পিকু (Pikoo) [১৯৮০]
সত্যজিৎ রায়ের নিজের ছোটগল্প পিকুর ডায়েরির দৃশ্যরূপ পিকু । ২৬ মিনিটের রঙ্গিন এই শর্টফিল্মের নামভূমিকায় পিকু নামের এক ছোট্ট বালক, যার চোখ দিয়ে দেখানো হয়েছে তার বাবা-মায়ের দাম্পত্য কলহ , মায়ের অবৈধ প্রেমিক, দাদুর মৃত্যুশয্যা এবং সবশেষে পিকুর একাকী জীবনের নিষ্পাপ চোখ যা শুধুই পবিত্রতা ধারণ করে । মূলত টিভিতে প্রচারের জন্যেই এই শর্টফিল্মটি বানিয়েছিলেন তিনি । ১৯৮০ সালে নির্মিত ২৬ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই ছবিতে পিকুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্জুন গুহঠাকুরতা। পিকু সম্পর্কে সত্যজিৎ নিজেই বলেন- "a poetic statement that cannot be reduced to concrete terms".
ধারা : শর্টফিল্ম
অভিনয় : অপর্ণা সেন, শোভন লাহিড়ী, ভিক্টর ব্যানার্জি, প্রমোদ গাঙ্গুলি
সত্যজিৎ এর ভূমিকা :
ব্যাপ্তিকাল : ২৬ মিনিট
ভাষা : বাংলা
প্রযোজনা : হেনরি ফ্রেইজ
ডাউনলোড-
Click This Link
Click This Link
Click This Link
সুকুমার রায় (Sukumar Ray) [১৯৮৭]
সত্যজিৎের শেষ ডকুমেন্টারি হচ্ছে সুকুমার রায় , তাঁর পিতার জন্য অসাধারণ এক ট্রিবিঊট । ১৯৮৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সত্যজিৎ রায় প্রোডাকশান এর যৌথ নিবেদনের এই তথ্যচিত্রে দেখা মেলে বাংলা শিশুসাহিত্যের এক দিকপাল সুকুমারের বর্ণবহুল জীবনের । আবোল-তাবোল , হ-য-ব-র-ল, হেশোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি – এই তিন অদ্ভুতূড়ে অথচ ক্ল্যাসিক শিশুসাহিত্যের অসামান্য আজগুবি আর কাল্পনিক সব চরিত্রের ছবি দিয়ে শুরু এই ছবি। এরপরে ক্রমান্বয়ে আসতে থাকে উপেন্দ্রকিশোর (যিনি সত্যজিৎ এর পিতামহ) এর পুত্র সুকুমার এর জীবন আর কর্মের অসাধারণ ছাপগুলোর দৃশ্যায়ন । সুকুমারের জীবনের প্রসঙ্গানুসারে এসে যায় ননসেন্স ক্লাবের সাড়ে বত্রিশ ভাজা , বিলাতে ফটোগ্রাফি এবং প্রিন্টিং এ উচ্চতর পড়াশোনা, মন্ডা ক্লাবের মজারু সব কাজকর্ম, সন্দেশ পত্রিকার কাজ ইত্যাদি। দূর্লভ সব ছবি আর সুকুমারের সাহিত্যের চরিত্রগুলোর অভিনয়ের মাধ্যমে ছোট্ট পরিসরেও দেখা যায় সুকুমারের কর্ম আর অসামান্য জীবন। এই তথ্যচিত্রের ধারাবর্ণনায় ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা শিশুসাহিত্যে পাঠের স্বাদে যারা এখনো আচ্ছন্ন, তাদের জন্য এই তথ্যচিত্র দেখা আবশ্যক এবং আনন্দকর হবে।
ধারা : তথ্যচিত্র
অভিনয় : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত, সন্তোষ গুপ্ত, তপেন চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত
সত্যজিৎ এর ভূমিকা : চিত্রনাট্য, সংগীত, পরিচালনা
ব্যাপ্তিকাল : ৩০ মিনিট
ভাষা : বাংলা
প্রযোজনা : পশ্চিমবঙ্গ সরকার
ডাউনলোড-
Click This Link

সিনেমাখোরেরা সত্যজিৎ সিনামা সপ্তকে মুগ্ধ হবেন , এ আশা করা যেতেই পারে। আর সত্যজিৎ রায় এর আলোকে এই সপ্তকের দর্শন মুভিখোরদের জন্য আবশ্যকও বটে ।
বাংলা সিনেমায় সত্যজিৎ রায় এর কাজ এবং অবদান নিয়ে নতুন কিছু বলার নাই। বাংলা মুভ্যি মায়েস্ত্রো হিসাবে সত্যজিৎ আমার কাছে একক একটা নাম । তার অসাধারণ সব কাজের মধ্যে অপু ট্রিলোজি এবং কোলকাতা ট্রিলোজি সিনেমাপ্রেমীদের কাছে কমবেশী পরিচিত। কিন্তু অসাধারণ প্রতিভাধর এই মানুষটির সগর্ব বিচরণ যেমন শিল্প সাহিত্য সঙ্গীতের বিভিন্ন শাখায়, তেমনি ক্যামেরার পিছনের সত্যজিৎ রায়ও তাঁর অসামান্যতার ছাপ রেখেছেন বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টরি আর শর্টফিল্ম নির্মাণের মাধ্যমে। সেগুলো দেখেও সিনেমাপ্রেমীরা নিশ্চিত মুগ্ধ হবেন, বিস্মিত হবেন এবং আনন্দিত হবেন – একথায় জোরগলায় বলাটাও খুবই স্বাভাবিক।
একনজরের সত্যজিৎ রায়ের ডকুমেন্টরি আর শর্টফিল্মের ছোট্ট ফিল্মোগ্রাফিটা দেখে নেয়া যাক -
এবারে ক্রমান্বয়ে ডকুমেন্টরি এবং শর্টফিল্মগুলোর ছোট্ট রিভিঊ এবং ডাউনলোড লিংক নিয়ে কথা বলা যাক -
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) [১৯৬১]
সত্যজিৎ এর প্রথম ডকুমেন্টরি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে । ১৯৬১ সালে নির্মিত ৫৪ মিনিটের সাদাকালো এই তথ্যচিত্রে রবীন্দ্রনাথের দূর্লভ সব ছবি আর ভিডিও ফুটেজের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলা, শিক্ষাকাল, বিদেশযাত্রা এমনকি জমিদারীর সমকালীন দৃশ্যায়ন করা হয়েছে বিশ্বাসযোগ্যভাবে।
ধারা : বায়োগ্রাফিকাল ডকুমেন্টরি
ব্যাপ্তিকাল : ৫৪ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
প্রযোজনা : ফিল্মস ডিভিশান, ইন্ডিয়া
ডাউনলোড - Click This Link
টু (Two) [১৯৬৫]
প্রথম প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের প্রায় বছর তিনেক পরে সত্যজিৎ তার প্রথম শর্টফিল্ম এর জন্ম দেন , শিরোনাম Two। এর চিত্রনাট্য এবং সংগীতের দায়িত্বেও ছিলেন সত্যজিৎ। এই সাদাকালো শর্টফিল্মটি নির্মিত হয়েছিল কোন কথ্যভাষার ব্যবহার না করেই- নির্বাক চলচ্চিত্রের জন্য একটা ট্রিবিউট বলা যায় । তবে এখানেও চলচ্চিত্রের ভাষার দূর্দান্ত মুনশিয়ানা দেখা গিয়েছিল এ। জাত ফিল্মমেকারের জন্য স্রেফ দরকার ইচ্ছে, দেখিয়েছিলেন তরুণ সত্যজিৎ। কারণ নামকরণেও স্বকীয় সত্যজিৎ এই ছবিতে দেখান অর্থনৈতিকভাবে দুই মেরুতে অবস্থানরত ছোট্ট দুই ছেলের দ্বৈরথ। শিশু মনস্তত্বের পাশাপাশি সত্যিকার আনন্দলাভের চিরায়ত স্বাধীনতার সত্যপ্রকাশ এই শর্ট ফিল্মের ১৫ মিনিটের ক্যানভাসে ।
ধারা : শর্টফিল্ম
ব্যাপ্তিকাল : ১৬ মিনিট
ভাষা : নির্বাক
প্রযোজনা : Esso World Theater
ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=s36F-65pMtM
Click This Link
সিকিম (Sikkim) [১৯৭১]
সিকিম তথ্যচিত্রটির নির্মাণ ৭১ এ হলেও ভারত সরকার দীর্ঘদিন , প্রায় চার দশক ধরে এই প্রামাণ্যচিত্রকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল । সিকিমের সেসময়ের রাজা পালডেন থনডুপ নামগিয়্যাল তাঁর দেশে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে তৎকালীন সত্যজিত রায়কে এই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে নির্মাণ নিয়ে রাজার সাথে তার মত বিরোধও হয় । ১৯৭৫ সালে এক বিতর্কিত অবস্থার মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয় সিকিম। ফলে না ভারত, না সিকিম কোথাও মুক্তি পায়নি তথ্যচিত্রটা। এরপর নির্মাতাও হাল ছেড়ে দেন। দর্শক, ছবিপাড়াসহ সব মহল ভুলেই যান 'সিকিম' ছবির কথা। বিস্মৃতি কবলিত হয় এটি। ২০১০ এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয় ।
ধারা : ডকুমেন্টারি
বছর : ১৯৭১
ব্যাপ্তিকাল : ৬০ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
টরেন্ট ডাউনলোড - Click This Link
আংশিক ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=VmSeVvA61xU
দ্য ইনার আই (The Inner Eye) [১৯৭২]
শান্তিনিকেতনের অন্ধ চিত্রকর এবং শিক্ষক বিনোদ বিহারী মুখার্জির জীবন ও চিত্রকর্ম নিয়ে এই ডকুমেন্টরি । এটি সত্যজিৎ রায়ের নন-ফিচার ফিল্মগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রসংশিত এবং উল্লেখযোগ্য।সত্যজিৎ যখন শান্তিনিকেতনে পড়তেন তখন বিনোদ বিহারী মুখার্জি তাঁর সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। আধুনিক ভারতীয় চারুকলার অন্যরম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন অসামান্য প্রতিভাধর চিত্রশিল্পী এবং ম্যুরাল শিল্পী। এই ডকুমেন্টরিতে বিনোদ বিহারী মুখার্জির শিল্পমনস্কতার স্বকীয়তার পাশাপাশি দেখানো হয়েছে দৃষ্টিহীনতার সাথে সন্ধি করেও কীভাবে একজন সত্যিকারের শিল্পী একনিষ্ঠভাবে শিল্পের সাথে নিজেকে মিশিয়ে নিতে পারেন । শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিশীলতাকে বন্দী করে না - এই অসাধারণ অভিজ্ঞতার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় দ্য ইনার আই।
ধারা : বায়োগ্রাফিকাল ডকুমেন্টরি
সত্যজিৎ এর ভূমিকা : ধারাবর্ণনা, চিত্রনাট্য, সংগীত এবং পরিচালনা
ব্যাপ্তিকাল : ২০ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
প্রযোজনা : ফিল্ম ডিভিশান
ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=bqnpyV4GFbI
বালা (Bala) [১৯৭৬]
Bala নামের যে তথ্যচিত্রটি সত্যজিৎ নির্মাণ করেন সেটি ছিলো প্রখ্যাত ভারতনাট্যম শিল্পী বালাসরস্বতীকে নিয়ে। ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস এর অর্থায়নে ১৯৭৬ সালে এই তথ্যচিত্রটি প্রকাশিত হয় । ৩৩ মিনিটের রঙ্গিন এই Bala নামের যে তথ্যচিত্রটি সত্যজিত নির্মাণ করেন সেটি ছিলো প্রখ্যাত ভারতনাট্যম শিল্পী বালাসরস্বতীকে নিয়ে। ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস এর অর্থায়নে ১৯৭৬ সালে এই তথ্যচিত্রটি প্রকাশিত হয় । ৩৩ মিনিটের রঙ্গিন এই বায়োডকুমেন্টরির রচনা, পরিচালনা এবং সংগীতে ছিলেন সত্যজিত নিজেই । বর্ণনা ছিল ইংরেজিতে পঞ্চাশোত্তীর্ণ বালার জীবন এবং নৃত্যসাধনা নিয়ে এই তথ্যচিত্রে দেখা গিয়েছিল বালার অসাধারণ নৃত্যশৈলীর দৃশ্য। এমনকী ঐ প্রৌঢ় বয়সেও বালার নৃত্যশৈলী ছিল অসামান্য, যদিও তার প্রথম জীবনের নৃত্যচর্চা ছিলো অনেকটাই অনালোচিত । এ নিয়ে সত্যজিতের আক্ষেপও কম ছিল না। এই তথ্যচিত্রে দেখা যায় বালার অসাধারণ পারফর্ম্যান্স !
ধারা : বায়োগ্রাফিকাল ডকুমেন্টরি
রূপায়নে : বালাসরস্বতী
সত্যজিৎ এর ভূমিকা : ধারাবর্ণনা, চিত্রনাট্য, সংগীত এবং পরিচালনা
ব্যাপ্তিকাল : ৩৩ মিনিট
ভাষা : ইংরেজি
প্রযোজনা : ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস
ডাউনলোড-
https://www.youtube.com/watch?v=ak_a1RJ2DZc
পিকু (Pikoo) [১৯৮০]
সত্যজিৎ রায়ের নিজের ছোটগল্প পিকুর ডায়েরির দৃশ্যরূপ পিকু । ২৬ মিনিটের রঙ্গিন এই শর্টফিল্মের নামভূমিকায় পিকু নামের এক ছোট্ট বালক, যার চোখ দিয়ে দেখানো হয়েছে তার বাবা-মায়ের দাম্পত্য কলহ , মায়ের অবৈধ প্রেমিক, দাদুর মৃত্যুশয্যা এবং সবশেষে পিকুর একাকী জীবনের নিষ্পাপ চোখ যা শুধুই পবিত্রতা ধারণ করে । মূলত টিভিতে প্রচারের জন্যেই এই শর্টফিল্মটি বানিয়েছিলেন তিনি । ১৯৮০ সালে নির্মিত ২৬ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই ছবিতে পিকুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্জুন গুহঠাকুরতা। পিকু সম্পর্কে সত্যজিৎ নিজেই বলেন- "a poetic statement that cannot be reduced to concrete terms".
ধারা : শর্টফিল্ম
অভিনয় : অপর্ণা সেন, শোভন লাহিড়ী, ভিক্টর ব্যানার্জি, প্রমোদ গাঙ্গুলি
সত্যজিৎ এর ভূমিকা :
ব্যাপ্তিকাল : ২৬ মিনিট
ভাষা : বাংলা
প্রযোজনা : হেনরি ফ্রেইজ
ডাউনলোড-
Click This Link
Click This Link
Click This Link
সুকুমার রায় (Sukumar Ray) [১৯৮৭]
সত্যজিৎের শেষ ডকুমেন্টারি হচ্ছে সুকুমার রায় , তাঁর পিতার জন্য অসাধারণ এক ট্রিবিঊট । ১৯৮৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সত্যজিৎ রায় প্রোডাকশান এর যৌথ নিবেদনের এই তথ্যচিত্রে দেখা মেলে বাংলা শিশুসাহিত্যের এক দিকপাল সুকুমারের বর্ণবহুল জীবনের । আবোল-তাবোল , হ-য-ব-র-ল, হেশোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি – এই তিন অদ্ভুতূড়ে অথচ ক্ল্যাসিক শিশুসাহিত্যের অসামান্য আজগুবি আর কাল্পনিক সব চরিত্রের ছবি দিয়ে শুরু এই ছবি। এরপরে ক্রমান্বয়ে আসতে থাকে উপেন্দ্রকিশোর (যিনি সত্যজিৎ এর পিতামহ) এর পুত্র সুকুমার এর জীবন আর কর্মের অসাধারণ ছাপগুলোর দৃশ্যায়ন । সুকুমারের জীবনের প্রসঙ্গানুসারে এসে যায় ননসেন্স ক্লাবের সাড়ে বত্রিশ ভাজা , বিলাতে ফটোগ্রাফি এবং প্রিন্টিং এ উচ্চতর পড়াশোনা, মন্ডা ক্লাবের মজারু সব কাজকর্ম, সন্দেশ পত্রিকার কাজ ইত্যাদি। দূর্লভ সব ছবি আর সুকুমারের সাহিত্যের চরিত্রগুলোর অভিনয়ের মাধ্যমে ছোট্ট পরিসরেও দেখা যায় সুকুমারের কর্ম আর অসামান্য জীবন। এই তথ্যচিত্রের ধারাবর্ণনায় ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা শিশুসাহিত্যে পাঠের স্বাদে যারা এখনো আচ্ছন্ন, তাদের জন্য এই তথ্যচিত্র দেখা আবশ্যক এবং আনন্দকর হবে।
ধারা : তথ্যচিত্র
অভিনয় : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত, সন্তোষ গুপ্ত, তপেন চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত
সত্যজিৎ এর ভূমিকা : চিত্রনাট্য, সংগীত, পরিচালনা
ব্যাপ্তিকাল : ৩০ মিনিট
ভাষা : বাংলা
প্রযোজনা : পশ্চিমবঙ্গ সরকার
ডাউনলোড-
Click This Link
সিনেমাখোরেরা সত্যজিৎ সিনামা সপ্তকে মুগ্ধ হবেন , এ আশা করা যেতেই পারে। আর সত্যজিৎ রায় এর আলোকে এই সপ্তকের দর্শন মুভিখোরদের জন্য আবশ্যকও বটে ।